SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা - সুস্থজীবনের জন্য শারীরিক শিক্ষা | NCTB BOOK

সাধারণভাবে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এই ধারণার মধ্যে আমরা কোনো পার্থক্য করি না। অনেক সময় একের জায়গায় অন্যটিকে ব্যবহার করি। কিন্তু এই দুই ধারণা সমার্থক নয় । এদের মধ্যে পার্থক্য আছে। লক্ষ্য হলো চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল আর উদ্দেশ্য হলো সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর সংক্ষিপ্ত ও নির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহ। যেমন- সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠার ক্ষেত্রে লক্ষ্য হলো ছাদ, আর সিঁড়ির এক একটি ধাপ হলো উদ্দেশ্য। লক্ষ্যের অস্তিত্ব মানুষের কল্পনায়, তার রূপায়ণ সম্ভব হয় না। কিন্তু উদ্দেশ্য হলো বাস্তব। মানুষ উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারে এমনকি তার পরিমাপও সম্ভব। শারীরিক শিক্ষাবিদগণ শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য বেশ কয়েকটি অন্তবর্তী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন শারীরিক শিক্ষাবিদগণ শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে নিম্নলিখিত মত ব্যক্ত করেছেন: উইলিয়ামস্-এর মতে “শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো ব্যক্তির শারীরিক, সামাজিক ও অন্যান্য দিকের সুষম উন্নতি ঘটিয়ে ব্যক্তিসত্তার সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধনের চেষ্টা করা”। বুক ওয়াল্টার বলেছেন- “শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক দিকসমূহের সুসমন্বিত বিকাশ সাধন”। এই বিকাশ সাধনের উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও নিয়মনীতি অনুসারে পরিচালিত খেলাধুলা, ছন্দময় ব্যায়াম এবং জিমন্যাস্টিকস্ ইত্যাদি ক্রিয়াকর্মে অংশগ্রহণ । এগুলোই শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে স্বীকৃত। বিশেষজ্ঞগণ কিছু উদ্দেশ্য সম্পর্কে একমত হলেও কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে মতের ভিন্নতাও প্রকাশ করেছেন। কয়েকটি প্রাথমিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতামত থেকে শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব। বিভিন্ন চিন্তাবিদদের মতামত বিবেচনা করে শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্যকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা-

১. শারীরিক সুস্থতা অর্জন ।

২. মানসিক বিকাশ সাধন ।

৩. চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন ।

৪. সামাজিক গুণাবলি অর্জন।

১. শারীরিক সুস্থতা অর্জন

ক. খেলাধুলার নিয়মকানুন মেনে ভালো করে খেলতে পারা।

খ. কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল করা।

গ. স্নায়ু ও মাংসপেশির সমন্বয় সাধনে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

ঘ. দেহ ও মনের সুষম উন্নতি করা।

ঙ. সুস্বাস্থ্যের মাধ্যমে শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করা।

চ. সহিষ্ণুতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করা।

২. মানসিক বিকাশ সাধন

ক. উপস্থিত চিন্তাধারার বিকাশ সাধন ।

খ. নৈতিকতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।

গ. সেবা ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হওয়া।

ঘ. বিভিন্ন দলের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে উঠা।

৩. চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন

ক. আনুগত্যবোধ ও নৈতিকতা বৃদ্ধি পাওয়া।

খ. খেলাধুলার মাধ্যমে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হওয়া।

গ. খেলোয়াড়ি ও বন্ধুত্বসুলভ মনোভাব গড়ে উঠা।

ঘ. প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মনোভাব গড়ে উঠা।

ঙ. আত্মসংযমী হওয়া ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা।

৪. সামাজিক গুণাবলি অর্জন

ক. নেতৃত্বদানের সক্ষমতা অর্জন ও সামাজিক গুণাবলি অর্জন করা।

খ. বিনোদনের সাথে অবসর সময় কাটানোর উপায় জানা।

গ. বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করা।

ঘ. সকলের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা ।

শারীরিক শিক্ষাবিদদের মতামত থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য সাধারণ শিক্ষার মতোই ব্যক্তিসত্তার সর্বোচ্চ ও সুষম বিকাশ সাধন করে থাকে এবং পরিকল্পিতভাবে খেলাধুলা পারদর্শিতা অর্জনে সাহায্য করে।

 

কাজ ১: শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের মধ্যে পার্থক্যগুলো পোস্টার পেপারে লিখে দেয়ালে লাগাও ।
কাজ ২:   সামাজিক উদ্দেশ্যগুলো দ্বারা কী অর্জন করা যায় দলে বিভক্ত হয়ে       আলোচনা কর।
কাজ ৩:

শারীরিক সুস্থতা অর্জনের উদ্দেশ্যগুলো বোর্ডে লিখে দেখাও।

 


 

Content added || updated By
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.